সিরিয়া মুসলিম ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ একটি ভূমিকা পালন করেছে, বিশেষ করে ইসলামের বিস্তার ও খিলাফতের গৌরবময় যুগে। ইসলাম এর প্রথম শতাব্দীতে সিরিয়া বিজয় হয়, যখন মুসলিম বাহিনী ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর অধীনে সিরিয়াতে প্রবেশ করে।
৬২৯ খ্রিষ্টাব্দে রোমান শাসক শোরাহবিল বিন আমর গাসসানী রাসূল সা.-এর দূত হারিস বিন উমায়ের (রা.)-কে হত্যা করলে মুসলমানরা বাধ্য হন যুদ্ধ ঘোষণা করতে। এর পরবর্তী ঘটনা হলো মুতার যুদ্ধ, যা রোমানদের বিপক্ষে মুসলিম বাহিনীর প্রথম বড় যুদ্ধ ছিল। এই যুদ্ধে তিন মহান সাহাবি শহীদ হন, তবে রোমান বাহিনী খালিদ ইবনে ওয়ালিদ (রা.)-এর নেতৃত্বে পরাজিত হয়।
মুদার যুদ্ধের পর রোমানরা মুসলমানদের বিপক্ষে আবার ষড়যন্ত্র করলে, রাসূল সা. তাবুক পর্যন্ত যাত্রা করেন এবং মুসলিম বাহিনীকে সিরিয়া সীমান্তে বিজয়ের লক্ষ্যে প্রস্তুত করেন। রাসূল সা.-এর ইন্তেকালের পর, আবু বকর (রা.)-এর নেতৃত্বে সিরিয়ার দিকে মুসলিম বাহিনী প্রেরণ করা হয়।
পরবর্তীতে সিরিয়া জয় এবং বিশেষ করে ইয়ারমুক যুদ্ধ একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা, যেখানে মুসলমানরা মাত্র ৩০,০০০ সৈন্য নিয়ে রোমানদের প্রায় ২,৪০,০০০ সৈন্যকে পরাজিত করে। রোমান সম্রাট হিরাক্লিয়াস এবং তার বাহিনী এই পরাজয় সহ্য করতে না পেরে দামেস্কের সুরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে বাধ্য হন।
এছাড়া, দামেস্কের অবরোধের সময় খালিদ ইবনে ওয়ালিদ (রা.) এবং আবু উবাইদা ইবনুল জাররাহ (রা.)-এর নেতৃত্বে সিরিয়ার শহরগুলো বিজয়ী হয় এবং ইসলামের পতাকা সেখানে উত্তোলিত হয়। সিরিয়ায় মুসলিম শাসনের প্রতিষ্ঠা মুসলিমদের ঐতিহাসিক শক্তি এবং বিজয়ের প্রমাণ।
এই ঘটনাগুলি মুসলিম ইতিহাসের গৌরবময় অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত এবং সিরিয়ার মুসলিম শাসনের পটভূমি নির্মাণে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে রয়েছে।
সূত্র : ইসলামের ইতিহাস ১ম খন্ড, আসহাবে রাসূলের জীবনকথা, ২য় খন্ড